আমার বিয়ে কবে হবে - ইসলামের আলোকে জেনে নিন

আমার বিয়ে কবে হবে? মানুষের জীবনে এক সময় আসে যখন মনের মধ্যে এই প্রশ্নই ঘুরপাক খায় যে। কেউ মজার ছলে জিজ্ঞেস করে, কেউ কৌতূহল থেকে, আবার কেউ একাকীত্ব বা সমাজের চাপে। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে কোনো পার্থিব 

আমার-বিয়ে-কবে-হবে
প্রতিযোগিতা নয় বরং এটি এক পবিত্র ইবাদত যা ঈমান, চরিত্র ও দায়িত্ববোধের পরীক্ষার ক্ষেত্র। বিয়ের সময় বা ভাগ্য আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করেন, যেমন ভাবে তিনি আমাদের রিজিক ও জীবনের প্রতিটি অধ্যায় নির্ধারণ করেছেন। তাই এই প্রশ্নের উত্তর কেবল সময় নয়, বরং আল্লাহর পরিকল্পনা ও আপনার প্রস্তুতির সমন্বয়ে লুকিয়ে আছে। আসুন আজ আমরা ইসলামের আলোকে জানার চেষ্টা করি কবে আমার বা আপনার বিয়ে হবে।

পেজ সুচিপত্রঃ আমার বিয়ে কবে হবে

ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব

বিয়ে ইসলামে শুধু সামাজিক রীতি নয় বরং এটি আধ্যাত্মিক ও নৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। কুরআন ও হাদিসে বিয়ের গুরুত্ব বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। বিয়ে হল আল্লাহর নির্দেশিত একটি সুন্নত যা জীবনের অর্ধেক ঈমান পূর্ণ করতে সাহায্য করে। মুসলিম যুবকদের জন্য বিয়ে মানে শুধু পারিবারিক দায়িত্ব নয় বরং নফস নিয়ন্ত্রণ, তাকওয়া ও পবিত্র জীবন নিশ্চিত করার পথ।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “বিয়ে আমার সুন্নত, যে আমার সুন্নত ত্যাগ করবে, সে আমার অন্তর্ভুক্ত নয়।” - সহিহ বুখারি

বিয়ের মাধ্যমে একজন মানুষ তার ইচ্ছাশক্তি ও কামনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। হাদিসে বলা হয়েছে যে, বিয়ে দৃষ্টি সংযত রাখে এবং পবিত্রতা রক্ষা করে। ইসলাম যুবকদের উৎসাহ দেয় যাতে তারা হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থেকে হালাল পথে জীবনের সঙ্গী খুঁজে পায়। ইসলামে বিয়ে কেবল দুটি মানুষকে যুক্ত করার নাম নয় বরং এটি সন্তানের লালনপালন, সমাজে স্থায়ী সম্পর্ক ও নৈতিক দায়িত্বের শিক্ষা দেয়।

বিবাহ সম্পর্কের মাধ্যমে মানুষ ধৈর্য, সম্মান, দয়া এবং দায়িত্বশীলতার শিক্ষা গ্রহণ করে। এছাড়াও বিয়ের মাধ্যমে সমাজে শান্তি ও সুসম্পর্ক বজায় থাকে। একজন বিশ্বাসী ব্যক্তি যখন ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী বিয়ে করে তখন তিনি ঈমান, চরিত্র ও পরিবার সব দিকেই বরকতময় জীবন গড়ে তুলতে সক্ষম হন।

ইসলামের দৃষ্টিকোণে বিয়ের সময় নির্ধারণ 

ইসলামে বিয়ের সময় নির্ধারণ কেবল সামাজিক বা পারিবারিক সুবিধার ওপর নির্ভর করে না। বরং এটি মানসিক, শারীরিক ও নৈতিক প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে। কুরআন ও হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে যে, একজন ব্যক্তি যখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয় তখনই বিয়ে করা উচিত। সে যদি সবদিক থেকে প্রস্তুত না হয় তবে যেন সে বিয়ে না করে। কারণ বিয়ে করা মানে একটি মানুষের দায়িত্ব নেওয়া। একটা নতুন জীবন শুরু করা তাই সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত হয়েই বিয়ে করা উচিত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “হে যুবকগণ! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে। কারণ এটি দৃষ্টি সংযত রাখে এবং পবিত্রতা রক্ষা করে।” - সহিহ বুখারি

এখান থেকে বোঝা যায় ইসলাম যুবকদের উৎসাহ দেয় যাতে তারা হালাল পথে জীবনসঙ্গী খুঁজে পায় এবং পবিত্রতা রক্ষা করে। তবে বিয়ের সময় নির্ধারণে শুধু আর্থিক সামর্থ্য নয়, আত্মপ্রস্তুতি, চরিত্র, তাকওয়া ও ধৈর্যও গুরুত্বপূর্ণ।

কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “অজানার চাবি শুধু তাঁর কাছে আছে; তা কেউ জানে না।” - সূরা আল-আন’আম (৬:৫৯)

অর্থাৎ বিয়ের সময় সম্পূর্ণ আল্লাহর হাতে। মানুষ শুধুমাত্র প্রস্তুতি নিতে পারে  মানসিক, শারীরিক ও নৈতিকভাবে। ধৈর্য ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ কখনো কখনো বিলম্ব আল্লাহর পরিকল্পনার অংশ।

বিয়ের সময়ে ধৈর্য রাখার কিছু ইসলামিক উপায় হলো আত্মসংযম রক্ষা করা এবং হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থাকা। নিয়মিত দোয়া ও ইস্তিখারা করা যাতে আল্লাহ সঠিক সঙ্গী ও সময় নিশ্চিত করেন। নিজেকে শারীরিক, মানসিক ও নৈতিকভাবে গড়ে তোলা। সঠিক সময়ে বিয়ে করা মানে শুধুমাত্র একজন জীবনসঙ্গী পাওয়া নয়, বরং ঈমান, পবিত্রতা ও সুখী দাম্পত্য জীবন নিশ্চিত করা।

ইসলাম সমাজে শান্তি ও স্থায়ী সম্পর্ক স্থাপনে সাহায্য করে। তবে বর্তমানে একজন ছেলেকে সামান্যতম ইনকাম না করে বিয়ে করা উচিত না। কারণ একজন ছেলে ইনকাম ছাড়া সকলের কাছে ঘৃনিত। তাই বিয়ে কারার কথা চিন্তা করার আগে আমাদের একটি হালাল রিজিকের সোর্সের ব্যবস্থা করা। ইসলামে বিয়ে তখনি করা উচিত যখন দেখবেন আপনার মধ্যে এ সকল গুনাগুন আছে: মানসিকভাবে প্রস্তুত অর্থাৎ সম্পর্কের দায়িত্ব নিতে সক্ষম। 

শারীরিক ও আর্থিকভাবে প্রস্তুত অর্থাৎ স্বামী বা স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবে। নৈতিক ও আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত মানে ধৈর্য, সহমর্মিতা ও আল্লাহভীতি থাকবে। ইসলাম সতর্ক করে দেয় যে, যদি কেউ প্রস্তুত না হয় সে তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করবে তাহলে দাম্পত্য জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। তাই আমার বিয়ে কবে হবে এই বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তিত না হয়ে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে।  ইসলামিক দৃষ্টিতে সঠিক সময় হলো যখন প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হবে এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী জীবনসঙ্গী পাওয়া সম্ভব হবে।

বিয়েতে দেরির কারণ ও তা মোকাবিলা

অনেক যুবক ও যুবতী ভাবেন, আমার বিয়ে হচ্ছে না কেন? বা দেরি কেন হচ্ছে? ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় বিয়েতে দেরি আল্লাহর পরিকল্পনার অংশ এবং এর পেছনে থাকে গভীর হিকমাহ। বিয়েতে দেরি কখনো ব্যর্থতার ইঙ্গিত নয়। বরং এটি আল্লাহর পরিকল্পনা, প্রস্তুতি এবং পরীক্ষা। ধৈর্য, দোয়া, আত্মসংযম এবং নিজের উন্নতি নিশ্চিত করলে আল্লাহ সঠিক সময়ে সঠিক জীবনসঙ্গী প্রদান করবেন। তাই আমাদের নিজেকে পবিত্র রাখে একটি হালাল রিজিকের ব্যবস্থা করতে হবে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে।

কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “সম্ভবত তোমরা কোনো বিষয় অপছন্দ করছো, অথচ তাতে তোমাদের জন্য মঙ্গল রয়েছে।” - সূরা আল-বাকারা (২:২১৬)

অর্থাৎ কখনো বিয়েতে দেরি ভালো ফলের জন্য হয়। এটি হতাশা বা হতাশাবোধের কারণ নয়।

বিয়েতে দেরির সাধারণ কারণ আত্মপ্রস্তুতির অভাব মানসিক, নৈতিক বা আর্থিকভাবে প্রস্তুত না হওয়া। সঠিক জীবনসঙ্গী না পাওয়া আল্লাহ কখনও এমন মানুষ পাঠান না, যিনি ক্ষতি করতে পারে। সমাজ ও পরিবারিক চাপ অনেক সময় পরিবারিক বা সামাজিক রীতিনীতির কারণে বিয়েতে বিলম্ব হয়। আল্লাহর সময় অনুযায়ী অপেক্ষা। কখনো আল্লাহর পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিক সময় আসতে দেরি হয়।

তা মোকাবিলার ইসলামিক উপায় হিসেবে ধৈর্য ও আত্মসংযম কুরআন শিক্ষা দেয়, ধৈর্যই সাফল্যের চাবি। “ধৈর্য ধারণ করো, তোমার ধৈর্য কেবল আল্লাহর মাধ্যমে।” - সূরা আনফাল (৮:৪৬)

দোয়া ও ইস্তিখারা করা। জীবনের বড় সিদ্ধান্তের আগে দোয়া ও ইস্তিখারা করলে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান। নিজেকে প্রস্তুত করা। শারীরিক, মানসিক ও নৈতিকভাবে নিজেকে উন্নত করা। হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থাকা। যেকোনো অবৈধ সম্পর্ক থেকে বিরত থাকলে আল্লাহ পবিত্র জীবনসঙ্গী পাঠান। বর্তমানে হারাম সম্পর্ক যেমন প্রেম ভালোবাসার নামে জিনা সমাজে একটা বড় ও প্রকট রূপ নিয়েছে। এবং বিয়ে সমাজে কঠিন হয়ে গিয়েছে। আমাদের সর্বদা হালাল পথে থেকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।

“অজানার চাবি শুধু তাঁর কাছে আছে; তা কেউ জানে না।” - সূরা আল-আন’আম (৬:৫৯)

রিজিক ও তাকদির কেন আল্লাহ দেরি করেন?

অনেকেই ভাবেন আমি ঠিক পথে আছি, কিন্তু বিয়ে বা রিজিক কেন দেরিতে আসে? আমার বিয়ে কবে হবে? ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝা যায় সব কিছু আল্লাহর রিজিক ও তাকদির অনুযায়ী নির্ধারিত। প্রত্যেক মানুষের জীবনসঙ্গী অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা এবং জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আল্লাহর হাতে। আল্লাহ যখন মনে করবেন আপনার জন্য এখন কিছু উত্তম তখনই আল্লাহ তা আপনাকে দান করবেন। কারণ আল্লাহ আপনার রিজিক ও তাকদির লিখেছেন। তিনিই ভালো জানেন আপনার জন্য কখন কি উত্তম।

কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তোমাদের যা কিছু আঘাত করেছে, তা তোমাদের নিজের কাজের কারণে আর তিনি অনেক কিছু মাফ করে দেন।” - সূরা আশ-শূরা (৪২:৩০)

অর্থাৎ কখনো কোনো দেরি বা বিলম্ব মানুষের পরীক্ষার অংশ হতে পারে। এটি হতাশা বা ব্যর্থতার কারণ নয়, বরং আল্লাহর পরিকল্পনার অংশ।

কেন আল্লাহ দেরি করেন? এর উত্তর হবে সঠিক সময়ে বরকত আনার জন্য। আল্লাহ কখনো অমোঘভাবে রিজিক বা জীবনসঙ্গী পাঠান না। সবকিছু সঠিক সময়ে আসে। সময়ের আগে আপনি যতই চেষ্টা করেন না কেন সম্ভব না। তাই ধৈর্য ধারণ করুন। মানুষকে প্রস্তুত করার জন্য আল্লাহ অনেক সময় দেরি করেন বিয়েতে। শারীরিক, মানসিক ও নৈতিকভাবে উন্নতি না হলে আল্লাহ জীবনসঙ্গী বা রিজিক দিতেও বিলম্ব করেন। পরীক্ষা ও ধৈর্য শেখানোর জন্যও হতে পারে। ধৈর্যই একজন মানুষকে আল্লাহর নিকট সৎ ও তাকওয়াপূর্ণ বানায়।
কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি।” - সূরা আশ-শারহ (৯৪:৬)

আমার-বিয়ে-কবে-হবে
ইসলামিক উপায় দেরি মোকাবিলার জন্য আপনাকে বেশি বেশি করে দোয়া ও ইস্তিখারা করতে হবে। জীবনের বড় সিদ্ধান্তের আগে দোয়া ও ইস্তিখারা করুন। এটি আপনার মনে প্রশান্তি এনে দিবে। ধৈর্যধারণ ও আত্মসংযম। হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থাকুন এবং ধৈর্য ধরে আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করুন। নিজেকে উন্নত করুন। শারীরিক, মানসিক ও নৈতিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করুন।

রিজিক ও তাকদিরের দেরি কখনো হতাশার কারণ নয় বরং এটি আল্লাহর দয়া, পরিকল্পনা এবং পরীক্ষা। আমার বিয়ে কবে হবে এই নিয়ে না ভেবে আমাদের ধৈর্য, দোয়া ও আত্মসংযমের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। সঠিক সময় হলে সঠিক রিজিক ও জীবনসঙ্গী আপনার কাছে আসবে।

বিয়ের জন্য মানসিক, শারীরিক ও আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি

বিয়ে হলো জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যেখানে একজন মানুষ আরেকজনের সাথে দায়িত্ব, ভালোবাসা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে একসাথে চলার অঙ্গীকার করে। তাই আমার বিয়ে কবে হবে শুধু এই চিন্তায় মগ্ন না থেকে বিয়ের আগে একজন মুসলিমের উচিত হবে নিজেকে মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে ও আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত করা। তা নাহলে বিবাহ জিবনে নানান রকম কলহ দেখা যাবে।

মানসিক প্রস্তুতি মানে হলো জীবনের দায়িত্ব ও পরিবর্তনকে গ্রহণ করার মানসিক শক্তি অর্জন করা।
যে ব্যক্তি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে জানে, রাগ ও কষ্টের সময় ধৈর্য ধরে, সেই প্রকৃত অর্থে বিয়ের যোগ্য।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ, যে তার পরিবারের প্রতি উত্তম আচরণ করে, আর আমি আমার পরিবারের প্রতি উত্তম আচরণ করি।” -  (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ৩৮৯৫)

এই হাদিসে বোঝানো হয়েছে যে মানসিকভাবে পরিণত ব্যক্তি তার জীবনসঙ্গীর প্রতি সদ্ব্যবহার করে, রাগ বা ভুল বোঝাবুঝিতে ধৈর্য ধারণ করে। মানসিক প্রস্তুতির মূল দিকগুলো হলো আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা। পারস্পরিক সম্মান শেখা। ভুল মেনে নেওয়া ও ক্ষমা করা। সম্পর্ককে ইবাদত হিসেবে দেখা ইত্যাদি। তাই আমাদের বিয়ে করার আগে অবশ্যই মানষিক ভাবে প্রস্তুত হতে হবে।

বিয়ে শুধু মানসিক নয় শারীরিক যোগ্যতাও জরুরি। ইসলাম এ ব্যাপারে বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি দেয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “হে যুবকগণ! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে; কারণ এটি দৃষ্টি সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংরক্ষণ করে।” -  (সহিহ বুখারি ৫০৬৬, সহিহ মুসলিম ১৪০০)

এখানে “السَّمَاعُ” বা “সামর্থ্য” বলতে বোঝানো হয়েছে শারীরিক শক্তি, আর্থিক সামর্থ্য এবং দায়িত্ব বহনের ক্ষমতা। শারীরিক প্রস্তুতির মূল দিকগুলো হলো শরীর সুস্থ রাখা। উপার্জনের সক্ষমতা অর্জন করা। দাম্পত্য জীবনের দায়িত্ব পালনের মানসিক ও শারীরিক শক্তি থাকা। একজন মানুষ শারীরিক ভাবে অসুস্থ হলে আগে তাকে নিজের সুস্থতার দিকে নজর দিয়া উচিত।

বিয়ের আসল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। তাই আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত না হলে বিয়ে কখনো শান্তির উৎস হতে পারে না।

কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হলো, তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য জীবনসঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া স্থাপন করেছেন।” -  (সূরা আর-রূম, ৩০:২১)

আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি মানে নামাজে মনোযোগী হওয়া, দোয়া ও ইস্তিখারা করা, তাকওয়া আল্লাহভীতি অর্জন করা, এবং হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থাকা।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “নারীকে বিয়ে করা হয় চার কারণে: সম্পদ, বংশ, সৌন্দর্য ও ধর্মপরায়ণতা। তবে তুমি ধর্মপরায়ণ নারীকে বেছে নাও, তাতেই তোমার কল্যাণ।” - (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০৯০)

আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত ব্যক্তি বিয়েকে দুনিয়ার সুখের জন্য নয় বরং আখিরাতের শান্তির জন্য করে। বিয়ে একটি দায়িত্ব। তাই ইসলাম শেখায় প্রথমে নিজেকে গড়ে তুলো তারপর সঙ্গী খোঁজো। মানসিকভাবে দৃঢ় হও, শারীরিকভাবে সুস্থ হও, আধ্যাত্মিকভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রস্তুত হও। তবেই তোমার বিয়েতে থাকবে বরকত, ভালোবাসা ও শান্তি। আমাদের এই সকল বিষয় খেয়াল রেখে বিয়ে করা উত্তম।

ভালো জীবনসঙ্গী পাওয়ার দোয়া ও আমল

বিয়ে ইসলাম ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। একজন নেক, সৎ ও পরহেজগার জীবনসঙ্গী পাওয়া শুধু দুনিয়ার সুখের নয় বরং আখিরাতেরও সফলতার চাবিকাঠি। একজন ভালো জীবনসঙ্গী পারে দুনিয়াতে জান্নাত তৈরি করতে। তাই আমাদের বিয়ের জন্য একজন নেক, সৎ ভালো জীবনসঙ্গী বাছাই করা। তাছাড়া আমরা দুনিয়া এবং আখিরাত দুই জায়গায় ধ্বংস। 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “দুনিয়া একটি ভোগবিলাসের জিনিস, আর দুনিয়ার সর্বোত্তম ভোগ্যবস্তু হলো নেক (ধার্মিক) স্ত্রী।” -  (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৪৬৭)

ভালো জীবনসঙ্গী পাওয়া বা দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য কুরআনের দোয়া রয়েছে সূরা আল-ফুরকান এর মধ্যে (২৫:৭৪)

উচ্চারণঃ রাব্বানা হাবলানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররিয়্যাতিনা কুররতা আ’য়ুনিওঁ ওয়াজআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা। 

“হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে আমাদের চোখের শীতলতা দান করো এবং আমাদের মুত্তাকিদের (পরহেজগারদের) নেতা বানাও।”

কুরআনে আরও আছেঃ “হে আমার প্রতিপালক! আপনি যা কল্যাণ আমার জন্য অবতীর্ণ করবেন, আমি তার প্রতি অতি প্রয়োজনীয়।”সূরা আল-কাসাস (২৮:২৪)

আমাদের নেক স্ত্রী বা স্বামী পাওয়ার জন্য অথবা দ্রুত বিয়ের জন্য কিছু  আমল করা উচিত। যা করলে আল্লাহ নেক জীবনসঙ্গী দান করেন। তার জন্য বেশি বেশি নামাজ নিয়মিত আদায় করা। ফরজ নামাজের পাশাপাশি নফল নামায পড়া এবং বেশি বেশি দুআ ও ইস্তেখারা করা। নামাজ মানুষকে অশ্লীলতা ও অন্যায় থেকে দূরে রাখে। “নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও অন্যায় থেকে বিরত রাখে।” - সূরা আল-আনকাবুত (২৯:৪৫)

যে নামাজে অবিচল থাকে, আল্লাহ তার জন্য এমন জীবনসঙ্গী নির্ধারণ করেন যিনি তাকওয়াবান ও চরিত্রবান। বিয়ের আগে নবী করিম (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন ইস্তিখারা নামাজ পড়তে, যাতে আল্লাহ সঠিক সিদ্ধান্তে সাহায্য করেন। ইস্তিখারা করলে আল্লাহ এমন পথ খুলে দেন যা কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়। “তোমাদের কেউ যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায়, তখন সে যেন ফরজ নামাজ ছাড়া দুই রাকাত নামাজ পড়ে, এরপর এই দোয়া করে…” - (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১১৬২)

সুতরাং আমার বিয়ে কবে হবে এই বিষয় না ভেবে আমাদের হারাম সম্পর্ক থেকে দূরে থাকতে হবে। যে ব্যক্তি হারাম সম্পর্ক থেকে নিজেকে সংযত রাখে, আল্লাহ তার জন্য পবিত্র জীবনসঙ্গী নির্ধারণ করেন। বর্তমানে হারাম সম্পর্ক আমাদের সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে। আমাদের এমন সময় দ্রুত একজন দ্বিনদার নারী দেখে বিয়ে করা উচিত। এতে আমাদের চরিত্র হেফাজতে থাকবে। “পবিত্র নারীরা পবিত্র পুরুষদের জন্য এবং পবিত্র পুরুষরা পবিত্র নারীদের জন্য।” - সূরা আন-নূর (২৪:২৬)

জীবনসঙ্গী বাছাই করতে ইসলাম কী বলে

ইসলাম একজন মানুষের জীবনে বিবাহকে শুধু সামাজিক চুক্তি নয় বরং একটি ইবাদত হিসেবে দেখেছে। তাই সঠিক জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা শুধু ব্যক্তিগত নয় বরং আখিরাতের সফলতার সাথেও সম্পর্কিত।

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে একটি হলো - তিনি তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের জন্য সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও, এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া স্থাপন করেছেন।” - সূরা আর-রূম (৩০:২১)

আমার-বিয়ে-কবে-হবে

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, একজন জীবনসঙ্গী এমন হওয়া উচিত, যিনি প্রশান্তি, ভালোবাসা ও রহমত আনতে সক্ষম। ইসলাম তাই শুধু সৌন্দর্য বা সম্পদ নয়, আখলাক ও ঈমানকে প্রধান মানদণ্ড করেছে। একজন ভালো এবং দ্বীনদার সঙ্গী পারে একটি সংসারকে সুখের করতে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ “নারীকে চার কারণে বিয়ে করা হয় - তার সম্পদের জন্য, বংশ মর্যাদার জন্য, সৌন্দর্যের জন্য, এবং তার দ্বীনের জন্য। কিন্তু তুমি দ্বীনওয়ালী নারীকে বেছে নাও, এতে তোমার কল্যাণ।” - সহিহ বুখারি (৫০৯০), সহিহ মুসলিম (১৪৬৬)

এই হাদিসে নবী (সা.) স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন - ধর্মপরায়ণতা (দ্বীন) হলো সঠিক জীবনসঙ্গী নির্বাচনের মূল ভিত্তি। তাই আমরা যদি জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে দ্বীনকে প্রধান্য না দিয়ে অন্য বিষয় গুলোকে প্রধান্য দিয় তবে ভবিষতে আমাদের তা নিয়ে কষ্ট পেতে হতে পারে। 

পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ  

“যখন তোমাদের কাছে এমন কেউ আসে, যার দ্বীন ও চরিত্র তোমরা পছন্দ কর, তবে তার সাথে বিবাহ দাও। যদি তা না করো, তবে পৃথিবীতে ফিতনা ও বড় অনাচার ছড়িয়ে পড়বে।” - তিরমিজি (১০৮৪)

অর্থাৎ শুধু মেয়ে নয়, বরং ছেলেকেও চরিত্রবান ও ঈমানদার হতে হবে। সমাজে অনেকে আছে যারা চরিত্র দ্বীনদারিতা না দেখে টাকা সম্পদ দেখে বিয়ে দেন, এর ফলে একসময় সে সংসারে নানান সমস্যা থেকে বিচ্ছেদে গড়ায়। তাই আমাদের বিয়ের আগে এইসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। ইসলাম বলে তোমরা দ্বীন ও আখলাককে প্রাধান্য দাও নামাজ, পর্দা, সততা ও নৈতিকতার প্রতি তার যত্ন কেমন তা দেখো।

বিয়েতে পরিবার ও সমাজের ভূমিকা

বিয়ে হয় একজন ছেলে এবং একজন মেয়ের মধ্যে। তারা সংসার করে কিন্তু তাদের সংসারের সাথে জরিত সকল মানুষের এখানে বেশ কিছু ভূমিকা রয়েছে। কারণ আমরা সমাজে বসবাস করি, সকলের সাথে চলাচল করি। তাই সকলের এক্ষেত্রে কিছু দায়িত্ব রয়েছে। ইসলাম বলে বাবা-মা এবং পরিবার হলো সন্তানের সবচেয়ে বড় উপদেষ্টা। তারা সন্তানকে সঠিক জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে দিকনির্দেশনা দিতে পারেন কিন্তু জোরজবরদস্তি নয়। 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন - “বিবাহিত নারীকে (পুনরায়) বিবাহ দেয়া যাবে না যতক্ষণ না তার অনুমতি নেওয়া হয়, এবং কুমারীকেও বিবাহ দেয়া যাবে না যতক্ষণ না তার সম্মতি নেওয়া হয়।” - সহিহ বুখারি (৫১৩৬), সহিহ মুসলিম (১৪১৯)

অর্থাৎ পরিবার ও সমাজ পরামর্শ দেবে, কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ছেলে-মেয়ের সম্মতি অপরিহার্য। তবে আমরা সমাজে এখন এর উল্টা টা দেখি। ছেলে মেয়ে যদি একে অপরকে পচ্ছন্দ করেও থাকে তবে কিছু অভিভাবক দুনিয়াবি কারণে বিয়ে দিতে রাজি হন না। এতে নানান রকম ঝামেলা ফাসাদের সৃষ্টি হয়। আমাদের বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ছেলে এবং মেয়ের সম্মতির উপর গুরুত্ব দিতে হবে। 

বিয়ের পর নবদম্পতি অনেক মানসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। পরিবার ও সমাজের উচিত তাদের সমর্থন ও সহনশীলতা দেখানো, সমালোচনা নয়। আমরা বিয়ের পর থেকে বিবাহিত দম্পত্তিকে এতটা চাপ দিয়ে থাকি যার ফলে তারা ডিপ্রেশনের মধ্যে দিয়ে দিন পার করেন। এবং সবথেকে বড় একটি ব্যাধি হলো যৌতুক। এই যৌতুকের কারণে আমাদের অনেক সংসার শুরু হওয়ার আগেই ভেঙে যায়। আবার অনেকে সব মেনে নিয়ে কষ্ট করে জীবন কাটিয়ে দেয়। ইসলামে যৌতুক দেয়া এবং নেয়া দুই হারাম। 

আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “নারীদের তাদের মোহর (মহরানা) আনন্দের সাথে প্রদান করো।” - সূরা আন-নিসা (৪:৪)

 এখানে আল্লাহ পুরুষদের দায়িত্ব দিয়েছেন মহর দেওয়ার, নারীর কাছ থেকে কিছু নেওয়ার নয়। অর্থাৎ বিয়েতে নারীকে সম্মানিত করা হয় দেয়ার মাধ্যমে, নেওয়ার মাধ্যমে নয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “সবচেয়ে বরকতময় বিয়ে হলো, যার খরচ সবচেয়ে কম।” - মুসনাদে আহমাদ (২৪৫২৯)

অর্থাৎ সহজ ও যৌতুকমুক্ত বিয়েই ইসলামে প্রশংসিত। 

বিয়ের পর সুখী জীবন গড়ার ইসলামিক পরামর্শ

বিয়ে শুধু দুইজন মানুষের বন্ধন নয় বরং এটি একটি ইবাদত ও পারস্পরিক দায়িত্ব। ইসলাম শেখায় সুখী সংসারের ভিত্তি হলো ভালোবাসা, দয়া, ধৈর্য ও আল্লাহভীতি। দুই জনকে সবকিছু মানিয়ে নিয়ে ভালোভাবে সংসার করাতেই উত্তম। 

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেনঃ “আল্লাহ তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও দয়া স্থাপন করেছেন।” - সূরা আর-রূম (৩০:২১)

অর্থাৎ আল্লাহর রহমতেই সংসারের প্রশান্তি।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে তার পরিবারের প্রতি উত্তম আচরণ করে।” - তিরমিজি (৩৮৯৫)

স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উচিত একে অপরকে সম্মান করা, কৃতজ্ঞ থাকা ও ক্ষমাশীল হওয়া। মতভেদ হলে ঝগড়া নয়, বরং নরমভাবে কথা বলা ইসলামের শিক্ষা। দাম্পত্য জীবনে সুখ ধরে রাখতে দুজনের উচিত একসাথে নামাজ আদায় ও দোয়া করা। একে অপরের ত্রুটি ঢেকে রাখা। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। রাগের সময় নীরব থাকা। আত্মীয়তা ও বন্ধুত্ব বজায় রাখা

উপসংহারঃ আমার বিয়ে কবে হবে

বিয়ে মানুষের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি শুধু সামাজিক বা মানসিক প্রয়োজন নয় বরং এক মহান ইবাদত। ইসলামে বিয়েকে পরিপূর্ণ জীবনধারার অংশ হিসেবে দেখা হয়েছে  যেখানে ভালোবাসা, ত্যাগ, ধৈর্য ও আল্লাহভীতি মিলেমিশে সংসারকে স্বর্গীয় করে তোলে। আমার বিয়ে কবে হবে এই চিন্তা না করে এবং বিয়েকে দেরি না করে যথাসময়ে করা উচিত এবং সবকিছুতে আল্লাহর উপর ভরসা রাখা আবশ্যক। কারণ তিনিই সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী।

একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের চাবিকাঠি হলো পারস্পরিক বোঝাপড়া, ক্ষমা ও একে অপরের প্রতি সহানুভূতি। ইসলামী শিক্ষা আমাদের শেখায়, স্বামী-স্ত্রী যেন একে অপরের জন্য দয়া, শান্তি ও সহযোগিতার প্রতীক হয়। জীবনের প্রতিটি ধাপে যদি দুজনেই আল্লাহভীতি ও ন্যায়নিষ্ঠা বজায় রাখে, তবে তাদের সংসার হবে রিজিক, রহমত ও সুখে পরিপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের প্রত্যেককে সুন্দর ও বরকতময় দাম্পত্য জীবন দান করেন - আমিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

উদায় ফ্লোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

Md. Saleh Ahammad Uday
Md. Saleh Ahammad Uday
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট। আমি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করি। আমি অনলাইন বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে মানুষকে সাহায্য করি।