আপওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার অবশ্যই একটি Upwork অ্যাকাউন্ট থাকা আবশ্যক। আপনার ফ্রিল্যান্সিং স্কিলসকে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে এবং বৈদেশিক মুদ্র উর্পাজনে আপওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট বিকল্প নেই। আজ আমি কীভাবে আপওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট খোলা যায় তা নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি আজকের পোষ্টটি আপনার জন্য উপকারি হবে।
আপওয়ার্কে কীভাবে অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন?
আপওয়ার্কে কাজ করার জন্য সঠিক ভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা খুবই জরুরী। প্রোফেশনালভাবে অ্যাকাউন্ট খোলা না হলে কাজ পাওয়া কষ্টকর হয়ে দাড়াবে। আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট খোলা খুবই সহজ। আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনার একটি ইমেইল অ্যাকাউন্ট থাকা প্রয়োজন , যার মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করা হবে।
অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপওয়ার্কে প্রবেশ করুন এবং Upwork sign up পেজে গিয়ে এ ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিন। আপনি গুগল অথবা অ্যাপল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগ ইন করে আপওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারবেন । এর জন্য আপনাকে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড মনে রাখতে হবে।
আপনি চাইলে নতুন ইমেইল ব্যবহার করেও অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কিছু তথ্য যেমন নাম, ইমেইল অ্যাড্রেস ও পাসওয়ার্ড এবং লোকেশন ইত্যাদি প্রদান করতে হবে। এখন আপওয়ার্ক থেকে একটি ভেরিফিকেশন মেসেজ যাবে আপনার ইমেইলে। এইবার ইমেইলে গিয়ে Verify Email এ ক্লিক করে ভেরিফিকেশন সম্পূর্ন করি।
আপওয়ার্কে যেভাবে প্রফাইল তৈরি করবেন?
প্রোফাইল প্রোপোজাল জমা দেওয়ার আগে আপনাকে কমপক্ষে ৫০% প্রোফাইল পূর্ণ করে সাবমিট করতে হবে। ১০০% প্রফাইল কমপ্লিট করে সাবমিট করা আপনার জন্য অনেক ভালো। তবে প্রাথমিক আবস্থায় আপনার জন্য ১০০% কমপ্লিট করা সম্ভব হবে না। কিন্তু আপনি নতুন কোন দক্ষতা অর্জন করে বা পোর্টফলিও আপডেট করে সেটা প্রফাইলে যুক্ত করতে পারবেন। এবং আপনার প্রোফাইল আপডেট চলতেই থাকবে। নিয়মিত আপনার প্রোফাইল আপডেট করুন এতে আপনার প্রোফাইল আরও বেশি শক্তিশালী হবে।
প্রথমিক ধাপে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিন
প্রথম ধাপে আপনাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। যেমন, আপনার কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে হবে। খুবই সুন্দর করে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে উপস্থাপন করবেন।
আপওয়ার্কে আপনি কী উদ্দ্যেশে এসেছেন তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। আপনার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হবে আপওয়ার্ক কী আপনার কাজের প্রধান উৎস নাকি ২য় কাজের উৎস। আপনি জব পাওয়ার চেষ্টা করবেন নাকি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে আসছেন। আপনার উদ্দ্যেশ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা দিন আপওয়ার্ক কতৃপক্ষকে। আপনি কোন ধরনের কাজ করতে পছন্দ করেন তা সম্পর্কে জানান। এসকল প্রশ্ন আপনি চাইলে স্কিপ করতে পারবেন।
আপনি কী কাজ করতে চান সে সম্পর্কে তথ্য দিন
আপনি আপওয়ার্কে কোন ধরনের কাজ করতে চান সে বিষয়ে তথ্য দিন। আপনি আপনার প্রোফাইলে বেশ কিছু দক্ষতা যুক্ত করুন। তবে সাধারনত ১০ থেকে ১৫ টি দক্ষতা যুক্ত করা ভালো যদি আপনার সেসকল দক্ষতা থাকে। দক্ষতা নেই এমন বিষয় যদি আপনি উল্লেখ করেন এবং ক্লায়েন্ট যদি তা বুঝতে পারে আপনি তার সাথে প্রতারণা করার চেষ্ঠা করছেন তবে সে আপনাকে কম রেটিং দিতে পারে । ফলসরূপ আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।
একজন ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখে আপনাকে হায়ার করবে কী না সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে। তাই আপনি অবশ্যই আপনার সম্পর্কে আপনার কাজ সম্পর্কে ক্লায়েন্টকে সুস্পষ্ট ধারনা দিবেন। যেসব বিষয়ে আপনি এক্সপার্ট সে বিষয়গুলো অল্প ভাষায় সুন্দর ভাবে হাইলাইট করুন।
আপনার দক্ষতার একটি লিস্ট তৈরি করুন
কাজের টাইটেল দিন
আপনার প্রোফাইলে একটি আকর্ষণীয় টাইটেল দিন। চেষ্টা করবেন যেন আপনার টাইটেল যেন ছোট (২ থেকে ৬ শব্দের মধ্যে হয়), পরিষ্কার এবং আপনার কাজকে বুঝাবে। ক্লায়েন্টরা যে ধরনের কীওয়ার্ড লিখে সার্চ করে সে সকল কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন যেন সার্চ দিয়ে ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল খুজে পাই। যেমন ধরেন আপনি Digital Marketing এর কাজ করেন তাহলে আপনি টাইটেল দিবেন Social Media Marketing Specialist বা SEO & Google Ads Expert । আবার আপনি যদি Graphic Design এর কাজ করে থাকেন তবে টাইটেল দিবেন Graphic Designer বা Professional Photoshop Editor। এইভাবে আপনার টাইটেল বার সাজিয়ে তুলবেন।
পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতা যোগ করুন
আপনি পূর্বে যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকেন বা মার্কেটপ্লেসের বাইরে কোনো ক্লায়েন্টের কাজ করে থাকেন তবে সে প্রতিষ্ঠানের বা ক্লায়েন্টের নাম সহ কাজের বর্ণনা দিন। এতে আপনার প্রোফাইলের ওয়েট বাড়বে। আপনি অন্য কোনো প্লাটফর্মে কাজ করে থাকলে ঐ প্লাটফর্মের পারফর্মেন্স উল্লেখ করতে পারেন। আপনার যদি কোনো অভিজ্ঞতা না থাকে তবে স্কিপ করতে পারেন।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা যুক্ত করুন
ভাষার দক্ষতা উল্লেখ করুন
আপনি যেসব ভাষায় স্পষ্ট ভাষায় কথা বলতে পারেন সেগুলো প্রোফাইলে যুক্ত করুন। যার ফলে ওই ভাষাভাষী ক্লায়েন্টরা আপনাকে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিবে। কোন ক্ষেত্রে আপনি যদি কাজে একটু কম দক্ষ হয়ে থাকেন কিন্তু ভালোভাবে ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন তবে ক্লায়েন্ট আপনাকে যোগাযোগের সুবিধার্তে কাজ দিতে চাইবে। তাই এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বায়ো তৈরি করুন
বায়ো হলো আপনার প্রোফাইলের সেই অংশ যেখানে আপনি নিজেকে এবং আপনার কাজকে ছোট আকারে ক্লায়েন্টের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। ক্লায়েন্ট আপনার বায়ো পড়ে আপনার সম্পর্কে বুঝার চেষ্টা করবে। যেমন আপনি কী কাজ করেন, আপনার কী দক্ষতা আছে বা আপনি একজন ক্লায়েন্টকে কীভাবে সাহায্যে করতে পারবেন।
⏩ একটি ভালো ফ্রিল্যান্সিং বায়োতে যা যা থাকা উচিত:
- নিজের পরিচয় → নাম বা পরিচয় দিয়ে শুরু করুন (যেমন:Digital Marketer, Graphic Designer, Web Developer)
- দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা → আপনার কোন কোন স্কিল আছে, কতদিন ধরে কাজ করছেন।
- ক্লায়েন্টকে কীভাবে সাহায্য করবেন → ক্লায়েন্টের সমস্যা কীভাবে সমাধান করবেন সেটা লিখবেন।
- Professional টোন → সংক্ষিপ্ত, স্পষ্ট এবং প্রফেশনাল ভাষা ব্যবহার করবেন।
- Call to Action (CTA) → শেষে ক্লায়েন্টকে আমন্ত্রণ জানানো যায় (যেমন: “Let’s work together to grow your business!”)।
আপওয়ার্ক প্রোফাইল পিকচার আপনার প্রোফাইলের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ক্লায়েন্টরা প্রথমেই আপনার ছবিটা দেখে প্রথম ইমপ্রেশন নেয়। প্রোফাইল পিকচার দেওয়ার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন-
- আপনার মুখটা যেন পরিষ্কার দেখা যায়।
- হালকা রঙের বা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করুন।
- ছবির সাইজ: ২৫০×২৫০px বা তার বেশি হয়।
- ছবির ফরম্যাট jpg বা png হবে।
- একটি পোর্টফোলিও অবশ্যই থাকতে হবে।
- যেকোন বিষয়ে ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা যুক্ত করতে হবে।
- আপনার অর্জিত সার্টিফিকেট যুক্ত করতে হবে।
- ভিডিওর মাধ্যমে আপনার পরিচয় যুক্ত করতে হবে।
- অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা যুক্ত করতে হবে।
উদায় ফ্লোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url